দিলিপ কুমার নাথ নামের এক পাগলের কাছে আমরা পোষ্ট গ্র্যাজুয়েট এর কোচিং করেছিলাম এমবিবিএস পাশের পর। তিনি নিজেকে পাগল বলতে ভালোবাসতেন, তাঁর কোচিং এ গিয়ে আমি পোষ্টগ্রাজুয়েশনে চান্স পাইনি সেটা আমার ব্যর্থতা, কিন্তু জীবনবোধের অনেক শিক্ষা সেখান থেকেই প্রাপ্ত। তিনি এমন কিছু নতুন নতুন কথা বলতেন যেটা বই কিংবা জার্নালে পাওয়া যেতনা, আমরাও ভাবতাম স্যার এমনি এমনি বলে।
একবার স্যার বললেন, ওরাল ড্রাগ (মুখে খাওয়ার ঔষধ ) না দিয়ে ইনসুলিন দিয়ে ডায়াবেটিস এর চিকিৎসা কইরো, বেশী বেশী করে বিটা সেল কে প্রেশার দিয়ে ইনসুলিন বের করার চেয়ে তাকে রেষ্ট দাও, সে কিছুদিন বিশ্রামে থাকলে আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারে। আর যুবক বয়সে বিটা সেল কে রেষ্ট দিও, উলটা পালটা খাইও না , লো ফ্যাট আর লো কার্ব খাও। বিটা সেলের যত্ন নাও সে একসময় তোমার যত্ন নেবে।
৬০তম জাপান ডায়াবেটিক কনফারেন্স, বিশ্বের বাঘা বাঘা প্রফেসর এসে উপস্থিত। শিকাগো ইউনিভার্সিটি,মিশিগান ভার্সিটি থেকে শুরু করে রয়েল কলেজের সব বিজ্ঞানী। আগামী পরশু আসছেন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমিরেটাস ক্রিষ্টোফার জে রোডস। ক্রিষ্টেফার সম্পর্কে একটা কথা বলি, বলা হয়ে থাকে এই পৃথিবীর ডায়াবেটিক চিকিতসায় অর্ধেক অবদান পুরো দুনিয়ার আর বাকী অর্ধেক প্রফেসর রোডস এর।
মজার বিষয় হলো, প্রফেসর ক্রিষ্টেফার নতুন এক গবেষনা নিয়ে বিশ্বের বিজ্ঞানীদের সামনে হাজির হচ্ছেন, জানেন সেই নতুন বিষয় কি?
Resting beta cell for diabetic treatment- বিটা সেলের বিশ্রাম, ডায়াবেটিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে। পুরো আর্টিক্যাল আমাদের আগে থেকেই প্রদান করা হয়েছে।
Resting beta cell for diabetic treatment- বিটা সেলের বিশ্রাম, ডায়াবেটিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে। পুরো আর্টিক্যাল আমাদের আগে থেকেই প্রদান করা হয়েছে।
আমি পড়ছি আর চোখের কোনে একটু করে পানি জমছে, নিকুঞ্জের তিনতলা বিল্ডিং এ বসে থাকা মানুষটার জন্য। কি অপূর্ব মেধা আর প্রজ্ঞা নিয়ে এ মানুষটা দুনিয়াতে এসেছে, জাতির দূর্ভাগ্য আমরা তাকে কাজে লাগাতে পারিনি।
যে কথা বিজ্ঞানীরা এখন বলছে, দিলিপ কুমার বহু আগেই একদিন চিল্লায়া ক্লাসে বলে গেছে।
আমি ডায়াবেটিস সেক্টরের মানুষ বলে হয়তো এই কথাটি এতো ভালো ভাবে মনে আছে। এমনো হতে পারে, এরকম হাজারো কথা আমার মাথা থেকে সরে গেছে।
হে আমাদের ভবিষ্যত ডাক্তারেরা, তোমাদের সৌভাগ্য তোমরা দিলিপ কুমার নাথ এর মতো শিক্ষকের ছোঁয়া পেয়েছো। খুব দুঃখ পাই যখন দেখি শুধু হিংসা বসে আমরা এই মহা মানবকে নিয়ে কটু কথা উচ্চারন করে ফেলি।
যদি আবার কখনো দেশে ফিরে যাই, পা ছুঁয়ে এ মানুষটাকে সালাম করে আসবো। ভালো থাকুন প্রিয় শিক্ষক।
লেখা - Dr.Sharif Qadri
শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ২০০৬-০৭
পিএইচডি রিসার্চার, আইচি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান..
শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ২০০৬-০৭
পিএইচডি রিসার্চার, আইচি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান..
This comment has been removed by the author.
ReplyDelete