Tuesday, April 7, 2015

রেবিসের শব্দিক অর্থ হচ্ছে ‌‘মেডনেস’ বা পাগলামি

রেবিসের শব্দিক অর্থ হচ্ছে ‌‘মেডনেস’ বা পাগলামি। জলাতঙ্ক বা রেবিস একধরনের সংক্রামক রোগ। এই রোগ বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে হয়ে থাকে। আক্রান্ত প্রাণীর সংস্পর্শ থেকে মানুষের মধ্যে এ রোগ আসে। এ রোগের প্রকোপ কম হলেও আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু অবধারিত। এ জন্য অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই। প্রতিবছর বিশ্বে ২৬-৫৫ হাজার লোক এ রোগে মৃত্যুবরণ করেন। 


রেবিস বা জলাতঙ্ক কী
এটা একধরনের ভাইরাসজনিত রোগ। এ রোগাক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্ক ও সপাইনাল কর্ড অকেজো করে ফেলে।

কোন কোন প্রানী  জলাতঙ্ক জীবানু বহন করে
যে সমস্ত প্রাণী ‘জলাতঙ্ক’ জীবানু অর্থাৎ রেবিস ভাইরাস বহন করে, তাদের কামড় বা আচড়ের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে এ রোগ ছড়ায়। সবচেয়ে বেশি এ জীবাণু বহনকারী প্রাণী হচ্ছে— বাদুড়, বানর, কুকুর, শেয়াল, বিড়াল; এছাড়া ভাল্লুক, কাঠবিড়ালী, ইঁদুর, গিনিপিগের মধ্যেও এ রোগের জীবাণু থাকতে পারে।

জলতঙ্ক কীভাবে ছড়ায়
এ রোগের জীবাণু আক্রান্ত প্রাণীর লালা, মস্তিষ্ক, ইত্যাদিতে অবস্থান করে। এ রোগে আক্রান্ত কোন প্রাণী যদি মানুষকে কামড় দেয় বা আচঁড় দেয় অথবা আক্রান্ত প্রাণীর লালা, মানুষের মুখ, নাক, চোখ ও  চামড়ার সংস্পর্শে আসে তবে এ রোগে আক্রান্ত হয়।

লক্ষনসমূহ  
রেবিসের জীবাণু মানুষের শরীরে প্রবেশ করা থেকে লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া পর্যন্ত ২-১২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
জ্বর জ্বর ভাব হওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশ নিস্তেজ হয়ে পড়া,    উত্তেজিত হয়ে যাওয়া, হেলোসিনেশন, পানিতে ভয় লাগা।
লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার  ২-১০ দিনের মধ্যে মৃত্যু অবধারিত বলা যায়।
জেনা জেইসা পৃথিবীর একমাত্র  সৌভাগ্যবান ব্যক্তি যিনি ২০০৪ সালে, রোগে আক্রান্ত হয়ে উপসর্গ দেখা দেওয়ার পরও বেচেঁ যান।

জলাতঙ্কের প্রতিরোধ
১. বন্য-হিংস্র প্রাণীর সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকা।
২. কুকুর, বিড়াল, খরগোসকে রেবিসের টীকা দেওয়া।
৩. গৃহপালিত প্রাণীদের নজরে রাখা
৪। যদি আক্রান্ত কোন প্রাণী আপনাকে কামড় বা আচঁড় দেয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে পানি দিয়ে ১০-১৫ মিনিট ধুয়ে সেখানে প্রভিডিন আয়োডিন বা এলকোহল জাতীয় এর্ন্টিসেপটিক লোসন লাগান।
৫। রেবিসে আক্রান্ত প্রাণীর কামড় বা আচঁড় দেবার ১০ দিনের মধ্যে প্রতিরোধক ইনজেকশন দিতে হবে।

রেবিস  ইনজেকশনের ৪টা ডোস। আগের সেই কষ্টকর ১৪টি ইনজেকশন দেবার এখন আর দরকার পরে না।

প্রথম ডোস প্রাণী দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিতে হবে।
প্রথম ডোসকে ০ তম দিন হিসেবে বিবেচনা করলে দ্বিতীয় ডোস ৩য় দিন, তৃতীয় ৭ম দিন এবং চতুর্থ ১৪তম দিনে দিতে হবে।

----ডা. মোহাম্মদ আনিসুর রহমান

Share:

0 comments:

Post a Comment

Definition List

Unordered List

Support

সকল